অর্জন, সাফল্য এবং আগামীর পথে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর

ভূমিকা

নিরাপদ, ব্যয়সাশ্রয়ী ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসম্পন্ন মহাসড়ক নেটওয়ার্ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ভূমিকা পালন করছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যকীয় আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর টেকসই সড়ক নেটওয়ার্ক নির্মাণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অব্যাহত কর্মপ্রয়াস গ্রহণ করেছে। এছাড়া দ্রুতগতিসম্পন্ন গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তণ ও স¤প্রসারণ, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো নিশ্চিতকরণ, মহাসড়কে আধুনিক টোল ব্যবস্থা প্রবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়কে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কৌশলগত উদ্দেশ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান সরকার দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করায় সা¤প্রতিক সময়ে মহাসড়ক নেটওয়ার্কের অবস্থাও ক্রমান্বয়ে উন্নত হতে শুরু করেছে। ফলে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন খাতে ব্যয় ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে। মানুষ পূর্বের চেয়ে স্বাচ্ছন্দে ও নিরাপদে আসা-যাওয়া করতে পারছেন। সরকারের রূপকল্প ২০২১ এর লক্ষ্য, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ২০৩০ অর্জন এবং সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেকে সামনে রেখে ক্রমান্বয়ে একটি আধুনিক মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

ইতিহাস ও বর্তমান কার্যক্রম

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্তির পর কেন্দ্রীয় পাকিস্তানের সব নির্মাণ কার্যাদির  ভার গনপূর্ত বিভাগের উপর ন্যস্ত হয় যা যোগাযোগ এবং পূর্ত নির্মাণ বা সিএন্ডবি নামে পরিচিত ছিল। সিএন্ডবি পূর্ব পাকিস্তানের সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে সিএন্ডবি দুটো ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং আরেকটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নামে আত্মপ্রকাশ করে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের মাত্র ২৫০০ কিলোমিটার সড়ক নিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের যাত্রা শুরু। সেখান থেকে মাত্র ৪৭ বছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সড়কের দৈর্ঘ্য ২২,৩৬২.৮৩ কিলোমিটার এ উন্নীত হয়েছে। মহাসড়ক নেটওয়ার্কের বিন্যাস অনুযায়ী ১০৩টি জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৩,৯৪৩.৬৯ কিলোমিটার। তন্মধ্যে ৮-লেন বিশিষ্ট জাতীয় মহাসড়ক ১৭.৫০ কিলোমিটার, ৬-লেন বিশিষ্ট জাতীয় মহাসড়ক ২০.৬০ কিলোমিটার এবং ৪-লেন বিশিষ্ট জাতীয় মহাসড়ক ৫৮৪.৫৪ কিলোমিটার। ১৪৮ টি আঞ্চলিক মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৪,৮৮২.৯৪ কিলোমিটার, যার প্রশস্ততা ৫.৫০ মিটার থেকে ৭.৩০ মিটার এবং ৭০৮টি জেলা মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ১৩,৫৩৬.২০ কিলোমিটার, যার প্রশস্ততা ৩.৭০ মিটার থেকে ৫.৫০ মিটার। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মহাসড়ক নেটওয়ার্কে বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের ও দৈর্ঘ্যের ৪,৪৩১টি সেতু, ১৪৯৩৩ টি কালভার্ট এবং ৪৩টি ফেরিঘাটে বিভিন্ন ধরণের ১০২টি ফেরি চলাচল করছে। মহাসড়ক  যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে যুগোপযোগী ও সময় সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে সওজ অধিদপ্তর ১০টি জোন, ২২টি সার্কেল, ৬৫টি বিভাগ এবং ১২৯টি উপবিভাগের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অর্জন ও সাফল্য

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২০৬টি প্রকল্প (সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১৮৮টি ও বৈদেশিক সহায়তায় ১৮টি) বাস্তবায়নাধীন ছিল। এ প্রকল্পগুলোর অনুকূলে জিওবি বরাদ্দ ১৫২৭২.০৩ কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা ৩৪১০.৮৯ কোটি টাকা মোট বরাদ্দ ১৮৬৮২.৯২ কোটি টাকা। এ অর্থবছরে মোট ১৬২৪০.২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ব্যয়ের শতকরা হার ৮৬.৯৩।

বিগত বছরগুলোতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন হয়ে আসছিল। কিন্তু মার্চ ২০২০ থেকে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রতিবেদনাধীন অর্থবছরে শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন সম্ভবপর হয়নি। তথাপি দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহের কাজের বাস্তবায়ন চালিয়ে নেয়া হয়েছে। বিগত অর্থবছরগুলোতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক এডিপি বাস্তবায়নের বিবরণ নিম্নরূপ:

অর্থবছর

প্রকল্প সংখ্যা

বরাদ্দের পরিমাণ (কোটি টাকা)

এডিপি বাস্তবায়নের হার

২০১৯-২০

২০৬

১৮৬৮২.৯২

৮৬.৯৩%

২০১৮-১৯

১৭৯

১৬৬১৮.৮৫

৯৯.৮২%

২০১৭-১৮

১৪০

১৪১৪৪.৬৮

৯৯.৮৯%

২০১৬-১৭

১৩৪

৮১৯৯.২৮

৯৯.৮৩%

২০১৫-১৬

১৩২

৫৯৯০.৩২

৯৯.৮৬%

নতুন অনুমোদিত প্রকল্প

২০১৯-২০ অর্থবছরে নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ৫৭টি (জিওবি অর্থায়নে ৫৫টি ও বৈদেশিক সহায়তায় ২টি)। তন্মধ্যে মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ৪১টি, সেতু নির্মাণ প্রকল্প ৭টি, ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে লিংক প্রকল্প ১টি এবং অন্যান্য প্রকল্প ৮টি।

২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের তালিকা

মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প

  1. বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ) – নাটোর জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  2. ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের নবীনগর হতে নয়ারহাট ও পাটুরিয়াঘাট এলাকা প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার হতে পাটুরিয়াঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটড লেনসহ সার্ভিসলেন ও বাস-বে নির্মাণ
  3. লাকসাম (বিনয়ঘর)- বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  4. সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাসড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ
  5. খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনা শহরাংশ (৪.০০ কিলোমিটার) ৪-লেনে উন্নীতকরণ
  6. কুড়িগ্রাম (দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর মহাসড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ
  7. ভুয়াপুর-তারাকান্দি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  8. ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-ফুলপুর-নকলা-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন
  9. রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া মহাসড়কের বিন্দুর মোড় হতে বিমানবন্দর হয়ে নওহাটা ব্রিজ পর্যন্ত পেভমেন্ট ৪-লেনে উন্নীতকরণ
  10. নোয়াখালী জেলার পেশকারহাট-চরএলাহী জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  11. ডোমার-চিলাহাটি-ভাউলাগঞ্জ, ডোমার-(বোড়াগাড়ী)-জলঢাকা-(ভাদুরদরগাহ) এবং জলঢাকা-ভাদুরদরগাহ-ডিমলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  12. কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণসহ ছয়না-যশোদল-চৌদ্দশত বাজার সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ
  13. কিশোরগঞ্জ (বিন্নাটি)-পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর-টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীতকরণ
  14. যশোর (রাজারহাট)-মনিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন
  15. কক্সবাজার জেলার একতাবাজার হতে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাটি পর্যন্ত মহাসড়ক জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন
  16. চাষাড়া-খানপুর-হাজীগঞ্জ-গোদনাইল-আদমজী ইপিজেড মহাসড়ক নির্মাণ
  17. দর্শনা-মুজিবনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন
  18. পালবাড়ী-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী জাতীয় মহাসড়কের মনিহার হতে মুড়ালী পর্যন্ত ৮-লেনে উন্নীতকরণ
  19. মাগুড়া-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  20. ফেনী (মাস্টারপাড়া)-আলোকদিয়া-ভালুকিয়া-লস্করহাট-ছাগলনাইয়া (শান্তিরহাট) জেলা মহাসড়কটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  21. কক্সবাজার জেলার রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  22. চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশ)-এর ৪ (চার) বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ
  23. ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের হাসাড়া পর্যন্ত জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  24. ঝিনাইদাহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের কুষ্টিয়া শহরাংশ ৪-লেনে উন্নীতকরণসহ অবশিষ্টাংশ যথাযথ মানে উন্নীতকরণ
  25. নাগেশ্বরী-কাশিপুর-ফুলবাড়ী-কুলাঘাট-লালমনিরহাট জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন
  26. সিরাজগঞ্জ- কাজিপুর- ধুনট- শেরপুর এবং সিরাজগঞ্জ (বাগবাটি) – ধুনট (সোনামুখী) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  27. সিংড়া-গুরুদাসপুর-চাটমোহর জেলা মহাসড়কের সিংড়া অংশের সড়ক বাঁধ উচুকরণসহ পেভমেন্ট পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্তকরণ
  28. পুঠিয়া-বাগমারা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  29. লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ মহাসড়ক (আর-১৪৫) ও লক্ষ্মীপুর-চরআলকজান্ডার-সোনাপুর-মাইজদী (জেড-১৪০৫) (চেইনেজ-০+০০০ হতে ২+০০০) মহাসড়ক প্রশস্তকরণ
  30. বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ
  31. ভোলা (পরানতালুকদার হাট)- চরফ্যাশন (চরমানিকা) আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন
  32. বাগেরহাট জেলার কচুয়া (পিংগুরিয়া) হতে হেরমা লঞ্চঘাট পর্যন্ত জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন
  33. নারায়ণগঞ্জ লিংক আঞ্চলিক মহাসড়ক (সাইনবোর্ড-চাষাড়া) ৬-লেনে উন্নীতকরণ
  34. বানেশ্বর (রাজশাহী)-সারদা-চারঘাট-বাঘা-লালপুর- (নাটোর) ঈশ্বরদী ( পাবনা) জেলা মহাসড়ককে আঞ্চলিক মহাসড়ক মানে উন্নীতকরণ
  35. নোয়াখালী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হাজি কামাল উদ্দীন সড়ক ( বেগমগঞ্জের ফ্যাক্টরী হতে কবিরহাটের ফলাহারী পর্যন্ত) উন্নয়ন
  36. আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ মহাসড়কসহ কর্ণফুলি টানেল সংযোগ মহাসড়ককে ৪-লেনে উন্নীতকরণ (শিকল্বাহা-আনোয়ারা সড়ক)
  37. শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রীজ এপ্রোচ) মহাসড়ক উন্নয়ন
  38. শেখপাড়া (ঝিনাইদহ)-শৈলকুপা-লাঙ্গলবান্ধ (শ্রীপুর)-ওয়াপদামোড় (মাগুরা) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ
  39. লেবুখালী-রামপুর-মির্জাগঞ্জ সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ
  40. টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ (হরিদাসপুর)-মোল্লাহাট (ঘোনাপাড়া) আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ
  41. নোয়াখালী সড়ক বিভাগাধীন ভূইয়ারহাট-দুধমাখা আরএইচডি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ এবং পেশকারহাট -চরএলাহী জেলা মহাসড়কের ৬ষ্ঠ কিলোমিটারে একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ

সেতু নির্মাণ প্রকল্প

  1. ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিন বাজার, সালেহপুর ও নয়ারহাট নামক স্থানে ৩টি সেতু নির্মাণ
  2. নোয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ পুরাতন, সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ ও কালভার্ট পুনর্নির্মাণ
  3. ফেনী-সোনাগাজী-মুহুরী প্রকল্প মহাসড়কের ৩০তম কিলোমিটারে ৩৯১.৩৪ মিটার দীর্ঘ মুহুরী সেতু এবং বক্তারমুন্সী-কাজিরহাট-দাগনভূঞা মহাসড়কের ১৩তম কিলোমিটারে ৫০.১২ মিটার দীর্ঘ ফাজিলাঘাট সেতু নির্মাণ
  4. বগুড়া-সারিয়াকান্দি জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন এবং বাঙালী নদীর ওপর আড়িয়াঘাট সেতু নির্মাণ
  5. দিঘলিয়া (রেলিগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা জেলা মহাসড়কের ১ম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর ওপর সেতু নির্মাণ
  6. লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগাধীন বিভিন্ন মহাসড়কে ৪টি সেতু নির্মাণ
  7. জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী সেতু এবং আরসিসি সেতু প্রতিস্থাপন (ঢাকা জোন)

ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে লিংক প্রকল্প

পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) ভিত্তিতে হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক (চিটাগাংরোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়কসহ) ৪-লেনে উন্নীতকরণের জন্য সহায়ক প্রকল্প

অন্যান্য প্রকল্প

  1. Feasibility Study and Detailed Design for Construction of Kewatkhali Bridge over the river Bramhaputra at Mymensingh with Railway Overpass and 4-Lane Approach (including Service Road) Road
  2. রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের অধীন পাহাড়/ভূমি ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের বিভিন্ন কিলোমিটারে ড্রেনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ
  3. সুগন্ধা নদীর ভাঙ্গন হতে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (দোয়ারিকা সেতু) রক্ষার্থে ৩.৭৫৬৬ কিলোমিটার নদীতীরে স্থায়ী রক্ষাপ্রদ কাজ
  4. টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক গড়ে তোলার জন্য ৪টি জাতীয় মহাসড়কের পার্শ্বে পণ্যবাহী গাড়ি চালকদের জন্য পার্কিং সুবিধা সংবলিত বিশ্রামাগার স্থাপন
  5. সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন
  6. টেকসই মহাসড়ক নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির অ্যাসফল্ট প্লান্ট, সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ
  7. টেকনিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরী ফ্যাসিলিটি (আরটিসিআইপিপিএফ)
  8. Study for Identification Prioritisation and Pre-Feasibility of PPP projects under Roads and Highways Department

২০১৯-২০ অর্থবছরের অর্জন

উন্নয়ন খাত

২০১৯-২০ অর্থবছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় নিম্নলিখিত প্রধান প্রধান কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে: 

সম্পাদিত কাজের অংগের নাম

কাজের পরিমান

৪-লেনে উন্নীতকরণ

১৩৩.৬৬ কিলোমিটার

ফেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ (সার্ফেসিং ব্যতীত)

১৯২.৬০ ‌কিলোমিটার

বিটুমিনাস সার্ফেসিং

১৮৬৮.৭২ কিলোমিটার

রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ

৫৮.৯৭ কিলোমিটার

মহাসড়ক প্রশস্তকরণ

১৪১৫.৫৩ কিলোমিটার

মহাসড়ক মজবুতিকরণ

১৫৩১.৫৪ কিলোমিটার

কংক্রিট সেতু নির্মাণ

৮৫টি (৩৪৪৩.৪১ মিটার)

আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ

৭৫২টি (২২৩৫.৫৮ মিটার)

পরিচালন খাত (মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ)

প্রতিবেদনাধীন অর্থবছরে সড়ক, সেতু মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ১৮৭৩.৫২ কোটি টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থের  বিপরীতে সারাদেশে নিম্নলিখিত প্রধান প্রধান কাজসমূহ সম্পন্ন করা হয়েছে:

সম্পাদিত কাজের অংগের নামকাজের পরিমান
বিটুমিনাস সার্ফেসিং (ওভারলে)৮৬২.৩১ কিলোমিটার
ডাবল বিটুমিনাস সার্ফেসিং ট্রিটমেন্ট (ডিবিএসটি)৫৪.৭৬ কিলোমিটার
কার্পেটিং২৭০.৪৩ কিলোমিটার
রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ৪৪.১০ কিলোমিটার
মাইনর মেরামত১১৭০.১৮ কিলোমিটার
সেতু পুননির্মাণ২৭টি
কালভার্ট পুনর্নির্মাণ১১৯টি

 

সমাপ্ত প্রকল্প

২০১৯-২০ অর্থবছরে ২১টি প্রকল্প সফলভাবে সমাপ্ত করা হয়েছে। সমাপ্ত প্রকল্পের মধ্যে মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ১৫টি, সেতু নির্মাণ প্রকল্প ৪টি, ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প ১টি এবং অন্যান্য প্রকল্প ১টি।

মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প

১. জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ

২.  ফরিদপুর (বদরপুর) সালথা-সোনাপুর-মুকসুদপুর মহাসড়ক উন্নয়ন

৩.  ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের রামরাইল ব্রিজ এপ্রোচ থেকে পুনিয়ট মোড় পর্যন্ত মহাসড়ক জাতীয় মহাসড়ক মানে ও প্রশস্ততায় ঊন্নীতকরণ

৪.  গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ঢাকা জোন)

৫. গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (কুমিল্লা জোন)

৬. চরফ্যাশন হতে বেতুয়া (লঞ্চঘাট) মহাসড়ক উন্নয়ন

৭.  কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল এমপি গেট হতে বাংলা বাজার ৪-লেন পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়ন

৮. মিরপুর ডিওএইচএস গেট-২ হতে মিরপুর-১২ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন

৯. নকলা বাইপাস জেলা মহাসড়ককে যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ

১০. সুলতানপুর চিনাইর আখাউড়া মহাসড়ক উন্নয়ন

১১. এলেঙ্গা-ভূঞাপুর-চরগাবসারা মহাসড়কে ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ও ১টি কালভার্ট

১২. দাগনভূঁইয়া-তালতলী বাজার-চৌধুরীহাট-বসুরহাট জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মানে পুনর্নির্মাণ এবং আঞ্চলিক মহাসড়কটি উন্নয়ন ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ

১৩. দোয়াভাঙ্গা-শাহরাস্তি-পানিওয়ালা (রামগঞ্জ) জেলা মহাসড়ককে যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ

১৪. ক্ষতিগ্রস্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কসমূহ জরুরী পুনর্বাসন প্রকল্প (গোপালগঞ্জ জোন)

১৫. গৌরীপুর-কচুয়া-হাজিগঞ্জ মহাসড়কের চেইনেজ ০+০০০ হতে ১০+০০০ ও চেইনেজ ২৪+০০০ হতে ৪২+০০০ পর্যন্ত মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ

সেতু নির্মাণ প্রকল্প

১. তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ

২. ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৯২তম কিলোমিটারে ২১৯.৪৫৬ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু (সাহাবাজপুর সেতু) নির্মাণ

৩. মুন্সিগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহ স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন (১ম পর্যায়)

৪. বরিশাল-ঝালকাঠী-রাজাপুর-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪৬তম কিলোমিটারে পোনানদীর ওপর পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ

ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভূলতায় ৪-লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ

অন্যান্য প্রকল্প

উভয়পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণের নিমিত্ত প্রণীত ডিজাইন রিভিউ, পুনর্বাসন পরিকল্পনা হালনাগাদকরণ এবং অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ

মানব সম্পদ উন্নয়ন

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও কর্মচারিদের পেশাগত উন্নতি ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হালনাগাদ রাখার জন্য সড়ক ও জনপথ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়মিত বিভিন্ন কারিগরি ও চাকরি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সর্বমোট ৮৪ দিনে ৬৩টি ইন-হাউজ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৮১০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮, সচিবালয় নির্দেশমালা-২০১৪, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, জেনারেল ফাইন্যান্সিয়াল রুলস ইত্যাদি চাকরি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল, ই-জিপি, ই-নথি, ডায়নাসিম, ফিল্ডবাজ সফটওয়্যার, কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট, অকুপেশনাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি, অটোক্যাড ইত্যাদি কারিগরি প্রশিক্ষণ। এছাড়াও ৩৬তম ও ৩৭তম বিসিএস-এ যোগদানকৃত সহকারী প্রকৌশলীদের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ-এ ‘কারিগরি বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স’ও আয়োজন করা হয়েছে। ২০২০-এর মার্চ মাস থেকে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রশিক্ষণে সাময়িক বিরতি থাকলেও জুন ২০২০ থেকেই অনলাইনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে এক নতুন যুগে পা দিয়েছে সওজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ২০২০-২১ অর্থবছরে পূর্বেকার প্রশিক্ষণসমূহের সাথে জিআইএস সফটওয়্যার, এনভায়রনমেন্টাল মনিটরিং ইত্যাদি নতুন কিছু প্রশিক্ষণ শুরু করা এবং সওজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য ওয়েবসাইট নির্মাণসহ বেশ কিছু উদ্ভাবনী পরিকল্পনাও রয়েছে।

সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট ৩.৬ অর্জন অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হার অর্ধেক নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক National Road Safety Strategic Action Plan (2017-20) অনুযায়ী প্রকৌশলগত বিভিন্ন কার্যক্রম ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং এর আলোকে ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক কারিগরি নির্দেশিকা’ প্রকাশ করা হয়েছে। এ সময়ে সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • পণ্যবাহী গাড়ি চালকদের বিশ্রামহীনতা ও অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনা রোধকল্পে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমসার, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের জগদীশপুর, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের পাঁচিলা ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মাগুড়ার লক্ষ্মীকান্দর-এ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত ৪টি বিশ্রামাগার নির্মাণের লক্ষ্যে প্রণীত ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ২টি প্যাকেজের কার্যাদেশ প্রদানের পর পূর্ত কাজ শুরু হয়েছে এবং অপর ২টি প্যাকেজের শীঘ্রই দরপত্র আহবান করা হবে।
  • ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ২০৩ কিলোমিটার, জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার এবং বনানী-গাজীপুর মহাসড়কের ২৭ কিলোমিটার এর সমন্বয়ে মোট ৩০০.০০ কিলোমিটার অংশে রোড সেফটি অডিট সম্পন্ন করার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে।
  • সড়ক সংযোগকে নিরাপদ করার জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন সড়ক বিভাগের আওতাধীন মোট ৯৪টি ইন্টারসেকশন ডিজাইন করা হয়েছে। এ সকল ইন্টারসেকশন দুর্ঘটনা হ্রাসে সহায়ক হবে।
  • সড়কের স্থায়ীত্ব রক্ষার জন্য “সড়ক ও জনপথ অধিপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেললোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্প একনেক কর্তৃক অনুমোদনের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের কাজ চলমান আছে।
  • জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও দুর্ঘটনা রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বুয়েট কর্তৃক চিহ্নিত ১০৮টি দুর্ঘটনা প্রবণ স্থান ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডোরে প্রয়োজনীয় সাইন-সিগনাল, রোড মার্কিং স্থাপনের লক্ষ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

এছাড়া, সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত সুপারিশ এর (১১১টি) আলোকে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত স্থাপনাসমূহ

প্রতিবেদনাধীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৮টি স্থাপনা/কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।  এগুলো হল: (১) ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। (২) তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ্ আমানত সেতু) নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬-লেন বিশিষ্ট এপ্রোচ মহাসড়ক। (৩) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভূলতায় ৪-লেন বিশিষ্ট  ফ্লাইওভার। (৪) ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ২৫টি সেতু। (৫) মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহ স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন (১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় সমাপ্তকৃত ১৩টি সেতু। (৬) ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক মহাসড়কের ৭২তম কিলোমিটারে বানার নদীর ওপর ২৮২.৫৫৮ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু। (৭) ভোমরা স্থলবন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক। (৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের ইন্দ্রপুল হতে চক্রশালা পর্যন্ত বাঁক সরলীকরণ (পটিয়া বাইপাস সড়ক)। তথ্যসহ (পরিশিষ্ট-ক) -তে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য স্থাপনাসমূহের বিবরণ

ভোমরা স্থলবন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ

১৮১.৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোমরা স্থলবন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি সমাপ্ত হয়েছে। এর ফলে ভোমরা স্থলবন্দরের সাথে সারাদেশের মহাসড়ক যোগাযোগ উন্নততর হয়েছে। একই সাথে বাইপাস সড়ক ব্যবহারের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহর এলাকার যানজটের নিরসন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে এ মহাসড়কের শুভ উদ্বোধন করেন।

সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক

ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ভূলতায় ৪-লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ

ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা বাইপাস জাতীয় মহাসড়ক এবং ভূলতা-রূপগঞ্জ ও ভূলতা-আড়াইহাজার আঞ্চলিক মহাসড়কসমূহের সংযোগস্থল ভূলতা বাজার এলাকায় ৩২০.৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৪-লেন বিশিষ্ট ১২৩৮ মিটার দীর্ঘ গ্রেড সেপারেটেড ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পটি সমাপ্ত হয়েছে। এর ফলে ভূলতা এলাকার দীর্ঘদিনের যানজটের নিরসন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে নবনির্মিত এ ফ্লাইওভারটির শুভ উদ্বোধন করেন।

ভূলতা ফ্লাইওভার

ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের ইন্দ্রপুল হতে চক্রশালা পর্যন্ত বাঁক সরলীকরণ (পটিয়া বাইপাস মহাসড়ক)

৮৭.৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ইন্দ্রপুল থেকে চক্রশালা পর্যন্ত অংশের বাঁক সরলীকরণের নিমিত্ত ৫.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পটিয়া বাইপাস মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনার হার হ্রাস পেয়েছে এবং পটিয়া বাজার অংশের যানজট অনেকাংশে নিরসন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে নবনির্মিত এ মহাসড়কটির শুভ উদ্বোধন করেন।

পটিয়া বাইপাস মহাসড়ক

মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহে ১৩টি স্থায়ী কংক্রিট সেতু নির্মাণ

মুন্সীগঞ্জ জেলার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক নিরাপদ ও উন্নততর করার লক্ষ্যে ১৬৭.৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ জেলার ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুকে স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন প্রকল্পটি জুন ২০২০-এ সমাপ্ত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে এ প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ১৩টি সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত সেতুসমূহ হল: ইমামগঞ্জ সেতু, রসুনিয়া-১ সেতু, রসুনিয়া-২ সেতু, আলদি বাজার সেতু, পাঠানবাড়ি সেতু, বেলতলি সেতু, ছনবাড়ি সেতু, শ্রীনগর বাজার-১ সেতু, শ্রীনগর বাজার-২ সেতু, আটপাড়া সেতু, হাঁসাড়া-১ সেতু, হাঁসাড়া-২ সেতু এবং সাঁতগাও সেতু।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত সাতগাঁও সেতু

ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক মহাসড়কে বানার নদীর ওপর সেতু নির্মাণ

ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ৩৮.৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কটির ৭২তম কিলোমিটারে বানার নদীর ওপর ২৮২.৫৬ মিটার দীর্ঘ বানার সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে নবনির্মিত এ সেতুটি শুভ উদ্বোধন করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে  নবনির্মিত বানার সেতু উদ্বোধন

যাত্রাবাড়ি-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে

ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টার সেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবুবাজার লিংক সড়কসহ) মাওয়া পর্যন্ত এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪-লেনে উন্নয়ন করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে মহাসড়কটির শুভ উদ্বোধন করেন। এর ফলে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে রাজধানীর যোগাযোগের এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঢাকা- মাওয়া- ভাংগা এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন

ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ২৫টি সেতু নির্মাণ

দেশের পশ্চিম অঞ্চলের বিভিন্ন মহাসড়কে অবস্থিত ৮২টি সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন করে নতুন সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে নির্মিত ২৫টি সেতুর  শুভ উদ্বোধন করেন।

বারাশিয়া সেতু, ফরিদপুর

তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ্ আমানত সেতু) নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬-লেন বিশিষ্ট এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ

কুয়েত ফান্ডের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে নির্মিত শাহ আমানত (রঃ) সেতু (৩য় কর্ণফুলী সেতু)-এর  উভয় প্রান্তের যানজট নিরসনে ৩৪৬.৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর চট্টগ্রাম প্রান্তে বহদ্দারহাট থেকে সেতু পর্যন্ত ৫.০০ কিলোমিটার মহাসড়ক উভয় পাশে এক স্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিসলেনসহ ৪-লেনে এবং কক্সবাজার প্রান্তে ৩.০০ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে এ মহাসড়কের শুভ উদ্বোধন করেন।

তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উন্নয়নকৃত মহাসড়ক

মাননীয় মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক উদ্বোধনকৃত স্থাপনাসমূহ

প্রতিবেদনাধীন সময়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ১৪টি স্থাপনা/কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এগুলো হল: নবনির্মিত কক্সবাজার সড়ক ভবন, কক্সবাজার-টেকনাফ জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এর কাজ, খুরুস্কুল-চৌফলদন্ডী-ঈদগাঁও জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ কাজ, জনতাবাজার-গোরকঘাটা জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ কাজ, ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ কাজ, কক্সবাজার জেলার লিংক রোড-লাবনী মোড় জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প কাজ, উন্নয়নকৃত কুতুবদিয়া-আজম জেলা মহাসড়ক, উন্নয়নকৃত পেকুয়াবাজার-মগনামাঘাট জেলা মহাসড়ক, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার সে নানিবাসস্থ শ্যুটিং ক্লাব পয়েন্টে ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কর্তৃক নির্মিত আন্ডারপাস, চরফ্যাশন উপজেলা সদর হতে বেতুয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত নবনির্মিত মহাসড়ক, পিপিপি’র মাধ্যমে নির্মিতব্য ঢাকা বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ, সওজ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত ম্যুরাল,  রাংগুনিয়ার তেলিরপুল সেতুর নির্মাণ কাজ এবং গহিরা-ফটিকছড়ি মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থাপনা/কার্যক্রমের বিবরণ নিম্নরূপ:

কক্সবাজারে চলমান বিভিন্ন জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ

জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প (চট্টগ্রাম জোন)-এর আওতায় কক্সবাজার জেলায় খুরুস্কুল-চৌফলদন্ডী-ঈদগাঁও জেলা মহাসড়ক, জনতাবাজার-গোরকঘাটা জেলা মহাসড়ক ও ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথমানে উন্নীতকরণ কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে এ সকল নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।

ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়কে চলমান উন্নয়ন কাজ

কুতুবদিয়া-আজম জেলা মহাসড়ক এবং পেকুয়াবাজার-মগনামাঘাট মহাসড়কের শুভ উদ্বোধন

ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র প্রভাবে ২০১৬ সালের মে মাসে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে অধিকাংশ মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় ৪৩.২০ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়া-আজম জেলা মহাসড়ক এবং পেকুয়াবাজার-মগনামাঘাট মহাসড়ক দু’টির পুনর্বাসন ও উন্নয়ন করা হয়েছে। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে উন্নয়নকৃত এ মহাসড়ক দু’টির শুভ উদ্বোধন করেন।

পেকুয়াবাজার-মগনামাঘাট জেলা মহাসড়ক

সাভার সেনানিবাসস্থ শ্যুটিং ক্লাব পয়েন্টে আন্ডারপাস প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন

২৬.৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা- আরিচা মহাসড়কের সাভার সেনানিবাসস্থ শ্যুটিং ক্লাব পয়েন্টে ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কর্তৃক আন্ডারপাস নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এর ফলে এ মহাসড়কের উভয় পাশে অবস্থিত সেনানিবাসের মধ্যে যাতায়াত নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হয়েছে। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে এ আন্ডারপাসটির শুভ উদ্বোধন করেন।

মাননীয় মন্ত্রী কর্তৃক সাভার আন্ডারপাসের শুভ উদ্বোধন

পিপিপি’র মাধ্যমে নির্মিতব্য ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা

জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর মহাসড়ক (ঢাকা-বাইপাস) পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপভিত্তিতে ৪-লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ২-লেন বিশিষ্ট জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর মহাসড়ককে (ঢাকা-বাইপাস) পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপভিত্তিতে উভয়দিকে সার্ভিসলেন নির্মাণসহ ৪-লেন এক্‌সেস কন্ট্রোলড এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কটির নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান SRBG-SEL-UDC Consortium এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মধ্যে ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগকারী ২০ মার্চ ২০১৯ এ Dhaka Bypass Expressway Development Company Ltd গঠন করেছে। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী প্রকল্পের নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।

মাননীয় মন্ত্রী কর্তৃক ঢাকা বাইপাস মহাসড়ককে পিপিপি ভিত্তিতে একসেস কন্ট্রোলড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা

মাননীয় মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

২.৫০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সিলেট জোন অফিস ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে এ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

নির্মাণাধীন সিলেট জোন অফিস ভবন

মাননীয় মন্ত্রী কর্তৃক সিলেট জোন অফিস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্প

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় ১৮টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এছাড়া, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ অংশটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন আছে।  মেগা প্রকল্পসমূহের  বিবরণ নিম্নে দেয়া হল:

বাস্তবায়নাধীন বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট মেগা প্রকল্প

সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২: এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক সার্ভিসলেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম করিডোর দিয়ে যোগাযোগ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর অর্থায়নে ১১,৮৯৯.০১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর পর্যন্ত ১৯০.৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ এবং একস্তর নিচু দিয়ে উভয়পার্শ্বে পৃথক সার্ভিসলেন নির্মাণের কাজ চলমান। এ মহাসড়কটি পরবর্তীতে ভারত ও নেপালের সাথে সংযোগ স্থাপনের নিমিত্ত বাংলাবান্ধা সীমান্ত পর্যন্ত এবং ভারত ও ভুটানের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য বুড়িমারী সীমান্ত পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা-বাংলাবান্ধা অংশ এশিয়ান হাইওয়ে-২ ও সাসেক করিডোর-৯ এবং ঢাকা-বুড়িমারী অংশ সাসেক করিডোর-৪ এর অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের আওতায় ৮টি সড়ক নির্মাণ প্যাকেজ ছাড়াও হাটিকামরুলে একটি ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সড়ক গবেষণাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উন্নয়ন এবং এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রোড অপারেশন ইউনিট প্রতিষ্ঠা কার্যক্রমও এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত আছে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • নির্মাণ তদারকি পরামর্শক কর্মরত এবং ৮টির মধ্যে ৭টি সড়ক নির্মাণ প্যাকেজের কাজ চলমান
  • অবশিষ্ট ১টি সড়ক নির্মাণ প্যাকেজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে
  • হাটিকামরুল ইন্টারচেঞ্জ এবং সওজ-এর প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মিতব্য সড়ক গবেষণাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পূর্ত প্যাকেজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে
  • ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজ চলমান
  • ক্রমপুঞ্জিভূত ব্যয় ২১০১.১৩ কোটি টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ১৭.৬৬ শতাংশ।



উভয় পাশে সার্ভিসলেনসহ এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণের চলমান কাজ

মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (সওজ অংশ

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বহি:বাণিজ্যিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দেশের ব্যস্ততম চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের পরিপূরক হিসেবে বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে উন্নয়ন সহযোগী জাইকার সহায়তায় মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর। প্রকল্পটি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দু’টি সংস্থা বাস্তবায়ন করবে। বন্দর অংশটি বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দর সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ১৭,৭৭৭.১৬ কোটি টাকা, তন্মধ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অংশের প্রাক্কলিত ব্যয় ৮,৮২১.৩৪ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় ২০.৬৪৬ কিলোমিটার ৪-লেন মহাসড়ক (২-লেন প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত + ২-লেন সার্ভিস মহাসড়ক) ও মোট ৭,০৫৪ মিটার দীর্ঘ ১৭টি সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বিগত ১০ মার্চ ২০২০ তারিখে একনেক সভায় জানুয়ারি ২০২০ হতে ডিসেম্বর ২০২৬ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।

শীতলক্ষ্যা (২য় কাঁচপুর), ২য় মেঘনা ও ২য় গোমতি সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতুসমূহ পুনর্বাসন

৮,৪৮৬.৯৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে ৪-লেন বিশিষ্ট ৩টি সেতু যথাক্রমে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ৩৯৬.৫০ মিটার দীর্ঘ শীতলক্ষ্যা সেতু (দ্বিতীয় কাঁচপুর), মেঘনা নদীর ওপর ৯৩০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও গোমতী নদীর ওপর ১৪১০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সেতুসমূহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া, পুরাতন সেতুসমূহের পুনর্বাসনসহ প্রকল্পের মূল কাজ প্রায় সমাপ্ত। বর্তমানে ৩টি সেতুর এপ্রোচে ৩টি ফুটওভার ব্রীজসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলছে।

৪-লেন বিশিষ্ট শীতলক্ষ্যা সেতু (২য় কাঁচপুর সেতু)

৪-লেন বিশিষ্ট গোমতী সেতু

৪-লেন বিশিষ্ট মেঘনা সেতু

সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প: জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ

দক্ষিণ এশিয়ার ৭টি দেশ বাংলাদেশ, ভূটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও মায়ানমার নিয়ে গঠিত South Asia Sub-Regional Economic Cooperation (SASEC) ফোরাম। এ আঞ্চলিক সহযোগিতা ফোরামের আওতায় ২১টি উপ-আঞ্চলিক সড়ক করিডোর উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সাসেক ফোরামের সাথে সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ৬২১৪.৪১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় মহাসড়কটি ধীরগতির যানবাহনের পৃথক লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেণ্ট (ওএফআইডি), আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেণ্ট (এডিএফডি)-এর অর্থায়নে জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ককে উন্নীতকরণের কাজ চলমান আছে। প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কটিতে ৯টি উড়াল সড়ক,  ৫৩টি সেতু, ৭৬টি কালভার্ট, ১৩টি আন্ডারপাস, ৩০টি যাত্রী ছাউনি, সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশন ও পথচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে মহাসড়কের উভয়পাশে ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ড্রেনসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নের লক্ষ্যে মূল মহাসড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও, এ প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় সড়ক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক দেশের উত্তরাঞ্চলের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের একমাত্র করিডোর। ৪টি প্যাকেজের মাধ্যমে এ মহাসড়কটি উন্নয়নের জন্য জানুয়ারি ২০১৬ থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ফ্লাইওভার ও আন্ডারপাসসহ মহাসড়কের সম্পূর্ণ কাজ ২০২১ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ মহাসড়কটি সাসেক সংশ্লিষ্ট সকল দেশের মধ্যে দেশীয় ও আন্ত:দেশীয় সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নসহ ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রসার এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে যেমন ভূমিকা রাখবে, তেমনি রাজধানীর সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করবে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রধান অংগসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • ৬৫ কিলোমিটার মূল মহাসড়কের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • ৬৫টি কালভার্টের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • ২৫টি সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • ৮টি আন্ডারপাসের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • মূল সড়কের উভয়পাশের ১৪০ কিলোমিটার ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের মধ্যে ১০০ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • চন্দ্রা ও কোনাবাড়ি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ
  • ধেরুয়া ও লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণ কাজ শেষ
  • সড়ক ভবনের মূল কাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে এবং ভবনের ভেতর ও বাইরে ফিনিশিং প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত
  • সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এইচডিএম সার্কেলের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন
  • ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৭৮.০৩ শতাংশ।

উল্লেখ্য যে, ২৫টি সেতু, কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, ধেরুয়া ও লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস এবং ৪টি আন্ডারপাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শুভ উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

জয়দেবপুর-টাংগাইল-এলেংগা মহাসড়ক

আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক

৩,৫৬৭.৮৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫০.৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে উভয় পাশে এক স্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিসলেনসহ ৪-লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে ভারতীয় Line of Credit (LoC-2)- এর আওতায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। প্রকল্পের আওতায় ১৬টি সেতু, ০২টি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩টি আন্ডারপাস, ৩৬টি কালভার্ট ১০টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করার সংস্থান রয়েছে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • পূর্ত কাজের প্যাকেজ ০১ ও ০২ এর চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন। ঠিকাদারের জনবল নিয়োগ এবং সাইট ক্যাম্প নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিকাদার কর্তৃক alignment, ROW, প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ সীমানা চিহ্নিতকরণ ইত্যাদির কাজ চলমান। এছাড়া, মহাসড়কের বিভিন্ন চেইনেজে অবস্থিত সেতুর ১৯টি টেস্ট পাইলের কাষ্টিং সম্পন্ন
  • নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক নিয়োগ সম্পন্ন
  • পূর্ত কাজের প্যাকেজ ০৩-এর দরপত্র আহবান করা হয়েছে
  • ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কাজের পরামর্শক নিয়োগ সম্পন্ন
  • ইউটিলিটি স্থানান্তর এবং ভূমি অধিগ্রহণ কাজ চলমান রয়েছে
  • ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ২১.০৩ শতাংশ।

ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (WBBIP)

জাইকার অর্থায়নে ২,৯১১.৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলতি ব্যয়ে ওয়েস্টার্ন বাংলাদশে ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ৮২টি ঝুঁকিপূর্ণ ও সরুসেতু পুনর্নির্মাণের সংস্থান রয়েছে। প্রকল্পের ৫টি প্যাকেজের আওতায় ৫টি সড়ক জোনে ৬১টি সেতুর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ২৫টি সেতুর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলের ৩৬টি সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। অবশিষ্ট ২১টি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে ২টি নতুন প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদারগণের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্যাকেজের বিবরণ নিম্নরূপ:

প্যাকেজ

জোন

সেতুর সংখ্যা

জেলার নাম

মন্তব্য

PW-01

রংপুর

২০টি

বগুড়া (৩টি), রংপুর (৪টি), জয়পুরহাট (২টি), গাইবান্ধা (২টি), দিনাজপুর (৬টি), নীলফামারী (১টি), পঞ্চগড় (২টি)

নির্মাণ কাজ চলমান

PW-02

রাজশাহী

১৬টি

সিরাজগঞ্জ (৮টি), নাটোর (১টি), পাবনা (৪টি), নওগাঁ (১টি), রাজশাহী (২টি)

নির্মাণ কাজ চলমান

PW-03

খুলনা

৯টি

বাগেরহাট (২টি), যশোর (১টি), ঝিনাইদহ (২টি), কুষ্টিয়া (৩টি), নড়াইল (১টি)

নির্মাণ কাজ সম্পন্ন, বর্তমানে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে

PW-04

বরিশাল

৯টি

বরিশাল (৭টি), পিরোজপুর (১টি), ঝালকাঠি (১টি)

PW-05

গোপালগঞ্জ

৭টি

ফরিদপুর (৬টি), মাদারীপুর (১টি)

PW-06N

রংপুর ও রাজশাহী

৮টি

ঠাকুরগাঁও (১টি), নীলফামারী (২টি), গাইবান্ধা (১টি), বগুড়া (২টি), সিরাজগঞ্জ (১টি), নাটোর (১টি)

ঠিকাদারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে

PW-06S

খুলনা, বরিশাল ও গোপালগঞ্জ

১৩টি

ঝিনাইদহ (১টি), নড়াইল (১টি), সাতক্ষিরা (১টি), মাগুরা (১টি), বরিশাল (৩টি), ফরিদপুর (১টি), শরীয়তপুর (৫টি)   

                       

জুন ২০২০ পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি ৪৮.৫২ শতাংশ।

ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)

৩৬৮৪.৫৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে অবস্থিত সরু, ক্ষতিগ্রস্ত ও জরাজীর্ণ ১৬টি সেতু ও ৭টি কালভার্ট প্রতিস্থাপন এবং এশিয়ান হাইওয়ের সর্বশেষ মিসিং লিংক কালনায় মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ) বাস্তবায়নাধীন আছে।

সেতু ও কালভার্টসমূহের অবস্থান:

ভাংগা-ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ক       – ৫টি সেতু

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়ক                                               – ৪টি সেতু

রামগড়-বারৈয়ারহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক                                         – ১৫টি (৮টি সেতু ও ৭টি কালভার্ট)

নির্মিতব্য ১৭টি সেতুর মধ্যে ৮টি সেতু ৪‑লেন বিশিষ্ট ও ৯টি সেতু ২-লেন বিশিষ্ট। ৪-লেন বিশিষ্ট সকল সেতুর উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন থাকবে। কালনা সেতু নির্মাণসহ অন্যান্য সেতুসমূহ প্রতিস্থাপিত হলে উপ-আঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জুন ২০২০ পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ৩৩.৩৮ শতাংশ।

মধুমতি নদীর ওপর নির্মাণাধীন কালনা সেতু

গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি গাজীপুর-এয়ারপোর্ট)

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় দ্রুত, নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন করার লক্ষ্যে ৪২৬৮.৩২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে গাজীপুর হতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কোরিডোর স্থাপন ও পরিচালনার নিমিত্ত এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। বিআরটি ব্যবস্থা চালু হলে গাজীপুর-এয়ারপোর্ট রুটে উভয় দিকে প্রতি ঘন্টায় ২৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে এবং যাতায়াত সময় বহুলাংশে হ্রাস পাবে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি

 সওজ অংশ:

  • সকল সার্ভিস পাইল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং পাইল ক্যাপসমূহের অগ্রগতি ৮৫.২০ শতাংশ
  • ২১,১৯৫ মিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
  • ৬টি ফ্লাইওভারের Sub-Structure-এর কাজ শেষে Super-Structure-এর কাজ চলমান। ইতোমধ্যে ২৫.২০ শতাংশ বক্স গার্ডার সেগমেন্ট নির্মাণ সম্পন্ন
  • সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ ৭,৬১৫ মিটার সম্পন্ন
  • ভৌত অগ্রগতি ৪২.৬৪ শতাংশ

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ অংশ:

  • সার্ভিস পাইল ৪৮.৭৯ শতাংশ, পাইল ক্যাপ ৪৩.৫৫ শতাংশ, পিয়ার ৪৩.২০ শতাংশ এবং পিয়ারক্যাপ ৩.০৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে
  • ৬,১৫০ মিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে
  • ১৭৮টি আই-গার্ডার নির্মিত হয়েছে
  • ভৌত অগ্রগতি ২৯.৭০ শতাংশ

এলজিইডি অংশ:

  • গাজীপুর বাস ডিপোর নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে
  • ৩৩,৬০০ মিটার সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে

হযরত  শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে বিমানবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত আন্ডারপাস নির্মাণ:

  • ডিজাইন বিল্ড পদ্ধতিতে পথচারী আন্ডারপাস নির্মাণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়েছে
  • ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ১,১৮৯.৯৮ কোটি, টাকা যা প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২৭.৮৮ শতাংশ।

বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর চৌরাস্তায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার

বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ

বরিশাল-পটুয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের লেবুখালী নামক স্থানে পায়রা নদীর ওপর ১৪৪৭.২৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৪-লেন বিশিষ্ট ১৪৭০ মিটার দীর্ঘ পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। উল্লেখ্য যে, সেতুটির স্প্যানের দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার যা বাংলাদেশের নির্মিত/নির্মাণাধীন সেতুসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ। পদ্মা সেতু এবং এ সেতুটির নির্মাণ সমাপ্ত হলে ঢাকা থেকে সাগর কন্যা কুয়াকাটার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে কুয়াকাটায় দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সমাগম বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, সেতুটি পায়রা বন্দরের পণ্য পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • ভায়াডাক্ট সেতুর পাইলিং ও পিয়ার কনস্ট্রাকশন, মূল সেতুর ফাউন্ডেশন ডিজাইন রিভিউ, অতিরিক্ত টেস্ট পাইল, বরিশাল ও পটুয়াখালী প্রান্তের ভায়াডাক্ট সুপার স্ট্রাকচারের আই গার্ডার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত
  • ভায়াডাক্টের মোট ২৮টি ডেক স্লাবের মধ্য ২৭টি ডেক স্লাবের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
  • মূল সেতুর ৫২টি পাইলের মধ্যে ৫২টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন এবং ৫টি পিয়ারের মধ্যে ৫টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
  • বর্তমানে মূল সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের বক্স গার্ডার স্থাপন কাজ চলমান
  • মূল সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের বক্সগার্ডার-এর ৬৩০ মিটার এর মধ্যে ১১৫ মিটার নির্মাণ সম্পন্ন
  • জুন ২০২০ পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি ৪৮.১৩ শতাংশ।

নির্মাণাধীন লেবুখালী সেতুর  অংশ

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্প

ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ

১১,০০৩.৯১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টার সেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবুবাজার লিংক সড়কসহ) মাওয়া পর্যন্ত এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪-লেনে উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে মূল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটির আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে এ এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন করেন। এর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানীর যোগাযোগের এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪-লেনে উন্নীত মহাসড়কে নির্মিত ভাংগা ইন্টারচেঞ্জ

কুমিল্লা (টমছম ব্রিজ)-নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প

কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলার মধ্যে মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নততর করার লক্ষ্যে ২১৭০.৭৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কুমিল্লা (টমছম ব্রিজ)-নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) মহাসড়ককে ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ প্রকল্পের বাস্তবায়নের হার ৩০.৪০ শতাংশ।

ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ

ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিসলেন নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তরের নিমিত্ত ১,৮৬৭.৮৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে একটি লিংক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

পার্বত্য জেলায় সীমান্ত মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প

পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১,৬৯৯.৮৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ১ম পর্যায়ে ৪টি মহাসড়কের সমন্বয়ে ৩১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। সার্বিক অগ্রগতি ১২.৭৯ শতাংশ।

শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রীজ এপ্রোচ) মহাসড়ক উন্নয়ন

শরীয়তপুর জেলার সাথে সারাদেশের মহাসড়ক যোগাযোগ উন্নততর করার লক্ষ্যে ১৬৮২.৫৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রীজ এপ্রোচ) মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি সম্প্রতি একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প

ক্রমবর্ধমান ওভারলোডের কারণে দেশের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের স্থায়িত্ব কমে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে ১৬৩০.২৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প সম্প্রতি একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।

ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর পর্যন্ত মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ

১৪৮৫.৩৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ১৩.৩৮ কিলোমিটার মহাসড়কাংশ ৪-লেনে উন্নীতকরণের নিমিত্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। জুন ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি ৪৭.১৩ শতাংশ।

হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে লিংক প্রকল্প

১২০৯.৬০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) ভিত্তিতে হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক (চিটাগাংরোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়কসহ) ৪-লেনে উন্নীতকরণের জন্য সহায়ক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

বাস্তবায়নাধীন বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প

৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ

রাজাপুর-নৈকাঠী-বেকুটিয়া-পিরোজপুর মহাসড়কের ১২তম কিলোমিটারে কচা নদীর ওপর বেকুটিয়া পয়েন্টে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ৮২১.৮৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত অগ্রগতি

  • ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন
  • মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সকল পাইল নির্মাণ সম্পন্ন
  • উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান
  • ক্রমপুঞ্জিভূত ব্যয় ৪৩৫.৮২ কোটি টাকা। সার্বিক অগ্রগতি ৫৩.০৩ শতাংশ

মাতারবাড়ি কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ

দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে সরকার কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়িতে জাইকার অর্থায়নে ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উক্ত বিদ্যুৎ প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য জাইকার অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর মাতারবাড়ি কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৬৫৯.৯৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ১২.৬৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ/পুনর্বাসন এবং কোহেলিয়া নদীর ওপরে ৬৮০ মিটার দীর্ঘ একটি নতুন সেতু নির্মিত হবে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত অগ্রগতি

  • প্যাকেজ ০১-এর আওতায় নির্বাহী প্রকৌশলী, কক্সবাজার-এর নতুন ৪ তলা অফিস ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে
  • প্যাকেজ ০২-এর আওতায় ৫.৩কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণ/পুনর্বাসন এবং ৬৮০ মিটার কোহেলিয়া সেতু নির্মাণ এর আওতায় ০১টি বক্সকালভার্ট, ০২টি পাইলট পাইলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ০১টি লোড টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, ১৬.৫মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুর ০১টি সার্ভিস পাইলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
  •  প্যাকেজ ০৩-এর আওতায় (রাজঘাট হতে মুহুরীঘোনা পর্যন্ত ৭.৩৫ কিলোমিটার বাঁধ কাম সড়ক নির্মাণ ) ৩৭২০ মিটার Geotube Dyke এবং ৩১৮০ মিটার Earthen Dyke নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া, ৫,৭৫,০৬০ মিটার PVD, ১,২৪,২৫২.০০ মিটার PHD, ১,৪৮,০৭০.০০ বর্গমিটার Non-Woven Geotextile (Separation Layer), ৬৪,৪১০.০০ বর্গমিটার Woven Geotextile (400×50), ৩,০৮০.০০ বর্গমিটার Woven Geotextile (200×50) এবং ৩,৪০০ মিটার Sand Platform নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ০২টি স্লুইস গেটের জন্য ১৯৭টি পাইল কাস্টিং-এর কাজ সমাপ্ত হয়েছে (মোট ২৩৩টির মধ্যে)। তাছাড়া, ৩০,৫০৩টি সিসিব্লক-এর কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ

বাংলাদেশ সরকার ও সৌদি উন্নয়ন তহবিল (এসএফডি)-এর যৌথ অর্থায়নে ৫৯৯.২৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায় সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ পয়েন্টে ১,২৩৪.৫০ মিটার দীর্ঘ ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেতুটি নির্মিত হলে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর ও সোনারগাঁও উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এছাড়া, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর ঢাকা মহানগরীকে বাইপাস করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে জাতীয় মহাসড়ক-এর সহজ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।

জুন ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি

  • নদীর তলদেশে ১১৬টি সহ মূলসেতু ও ভায়াডাক্টের মোট ২৮২টি পাইল নির্মাণ সম্পন্ন
  • মূলসেতু ও ভায়াডাক্টের মোট ৩৮টি স্প্যানের সকল পিয়ার ও পিয়ারক্যাপ নির্মাণ সম্পন্ন
  • সেতুর পশ্চিম প্রান্ত সৈয়দপুরে ভায়াডাক্ট অংশের ১৩টি স্প্যানের প্রি-কাস্ট বক্স-গার্ডার নির্মাণ ও স্থাপন সম্পন্ন
  • নদীর পূর্ব প্রান্ত মদনগঞ্জে ভায়াডাক্ট অংশের ২০টি স্প্যানের প্রি-কাস্ট বক্স-গার্ডার নির্মাণ কাজ চলমান
  • মূলসেতুর ৫টি স্প্যানের কাস্ট-ইন-প্লেস টুইন বক্স-গার্ডার নির্মাণ কাজ চলমান
  • নদীর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে অ্যাপ্রোচ মহাসড়ক নির্মাণ চলমান
  • ক্রমপুঞ্জিভূত ব্যয় ৩৭৭.৯৬ কোটি টাকা। সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৬৪.৫৮ শতাংশ

নির্মাণাধীন ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু

কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এর আর্থিক অনুদানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ জাতীয় মহাসড়কের কক্সবাজার-টেকনাফ অংশের উন্নয়নের নিমিত্ত ৪৫৮.৩২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে দু’টি চুক্তির আওতায় মহাসড়কটির ৫০ কিলোমিটারের উন্নয়ন কাজ চলছে। জুন ২০২০ পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ৩৮.১৩ শতাংশ।

কক্সবাজার-টেকনাফ জাতীয় মহাসড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ

বৈদেশিক অর্থায়নে সম্ভাব্য গৃহীতব্য প্রকল্প

উভয় পার্শ্বে পৃথক সার্ভিস লেনসহ ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ

এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ২২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে এক স্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীত করার নিমিত্তি একটি প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ে ও সাসেক করিডোরভুক্ত এ মহাসড়ক উন্নয়নে গৃহীত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহের মধ্যে আঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে।

উভয় পার্শ্বে পৃথক সার্ভিস লেনসহ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ

তামাবিল স্থলবন্দরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নততর করতে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এর আর্থিক সহায়তায় সম্ভাব্য ৩৫৮৬.০৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫৬.১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ককে উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উভয় পার্শ্বে পৃথক সার্ভিস লেনসহ যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ

দেশের পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল এবং এ অঞ্চলের দারিদ্র্যের হার অপেক্ষাকৃত বেশি। এ প্রেক্ষিতে এ অঞ্চলের মহাসড়ক নেটওয়ার্ক উন্নততর করার মাধ্যমে দারিদ্র্যের হার কমানোর উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় Western Economic Corridor And Regional Enhancement (WeCare) প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় হাটিকামরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক এবং নাভারণ-সাতক্ষীরা-ভোমরা মহাসড়ককে উভয় পাশে সার্ভিসলেনসহ ৪-লেনে উন্নীত করা হবে। এ করিডোরটি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ১ম পর্যায়ে এ প্রকল্পের আওতায় সম্ভাব্য ৪৪৩০.৪৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ করিডরের যশোর-ঝিনাইদহ অংশকে উভয়পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বগা সেতু নির্মাণ

পটুয়াখালী জেলায় বগা নদীর ওপর ১০২০ মিটার দীর্ঘ বগা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ১১ মে ২০১৭ তারিখ চীন সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি হবে ৯ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

পিপিপি (Public Private Partnership) কার্যক্রম

২০১৯-২০ অর্থবছরে সড়ক পরবিহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্ততরে ২০টি প্রকল্প Public Private Partnership (PPP)-এর আওতায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত ছিল। প্রকল্পসমূহ পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণের জন্য যাচাই-বাছাই চলছে। এ পর্যন্ত পিপিপি প্রকল্পের অগ্রগতির বিবরণ নিম্নরূপ:

  • উভয়পাশে একস্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিসলেনসহ জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর মহাসড়ক (ঢাকা-বাইপাস) ৪-লেন উন্নীতকরণের জন্য ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে পিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য ২৩৬.৫০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সার্পোট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর মহাসড়ক (ঢাকা-বাইপাস) শীর্ষক লিংক প্রজেক্ট বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
  • উভয়পাশে একস্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিসলেনসহ হাতরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী আইডিয়ল স্কুল এন্ড কলেজ-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক (চিটাগাং রোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়কসহ) পিপিপি ভিত্তিতে ৪-লেনে উন্নীতকরণের নিমিত্ত বিনিয়োগকারী নিয়োগের লক্ষ্যে মূল্যায়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এছাড়া, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনের জন্য একটি Link Project অনুমোদিত হয়েছে।
  • উভয়পাশে একস্তর নিচু দিয়ে পৃথক সার্ভিসলেনসহ গাবতলী-নবীনগর মহাসড়ককে এক্সপ্রেসওয়ে-তে উন্নীতকরণের নিমিত্ত CCEA-এর নীতিগত অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে। পিপিপি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক Transaction Advisor নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে এবং নিয়োজিত Transaction Advisor কর্তৃক খসড়া ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে।
  • পিপিপি পদ্ধতিতে উভয়পাশে সার্ভিস লেন নির্মাণসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ৪-লেনে উন্নীতকরণ-এর লক্ষ্যে CCEA কর্তৃক নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পটি জাপানের জি টু জি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পিপিপি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক BUET কে Transaction Advisor নিয়োগ করা হয়েছে।
  • ঢাকা আউটার রিং রোড (দক্ষিণ অংশ) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য CCEA কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির জন্য পিপিপি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক Transaction Advisor নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে এবং সওজ অধিদপ্তরের মাধ্যমে Technical Study সম্পন্ন করার জন্য পরার্মশক নিয়োগ করা হয়েছে।

ডিজিটাল কার্যক্রম

এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র

মোটরযানের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১২ অনুযায়ী অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ Axle Load Control Station-এর কর্মকান্ড ওয়েব বেইজড রিমোট মনিটরিং সিস্টেম-এর আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মেঘনা, গোমতী, বাথুলী ও সীতাকুন্ডে এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। ইউনিফাইড টোল কালেকশনের জন্য EOI আহবান করা হয়েছে ।

ডিজিটাল আর্কাইভ সিস্টেম

ডিজিটাল আর্কাইভ সিস্টেম এ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন দপ্তর, মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়, বিভিন্ন প্রকল্প, সেতুর  প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ Available নথিসমূহ ডিজিটালাইজ করার জন্য সংরক্ষণ হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় নথিসমূহ সহজে এবং দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে। ডিজিটাল আর্কাইভ করার মাধ্যমে নথির গোপনীয়তা সংরক্ষিত থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নষ্ট হওয়া বা দুর্ঘটনায় পুড়ে যাওয়া এমনকি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের অনুপযোগী ডকুমেন্টসমূহ ব্যবহারের উপযোগী করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। প্রয়োজন অনুযায়ী ডকুমেন্টসমূহ Searching এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।

Tenderer Database Management System

এ অধিদপ্তরের ক্রয় কাজে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারগণের কর্মদক্ষতা সহজ, সঠিক, দ্রুত ও স্বচ্ছতার সাথে মূল্যায়ন করার নিমিত্ত ঠিকাদারগণের একটি পরিপূর্ণ ডাটাবেইজ, Tenderer Database Management System (TDMS)  তৈরী করা হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় Tenderer Database Management System এর ব্যবহার করা হচ্ছে।

ই-জিপি

ক্রয় প্রক্রিয়া দরদাতাদের অবাধ অংশগ্রহণ ও সমসুযোগ সৃষ্টি এবং ক্রয় প্রক্রিয়ায় দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ই-জিপি পদ্ধতি চালু করা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪,৬৭০টি দরপত্র ই-জিপি পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে।

প্রজেক্ট মনিটরিং সিষ্টেম

বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (ADP) পাশাপাশি সরকারী বরাদ্দকৃত প্রকল্প, উপ-প্রকল্প এবং প্রকল্পের উপাদান এর তথ্য প্রজেক্ট মনিটরিং সিষ্টেম (PrMS) এর মাধ্যমে সংরক্ষণ ও মনিটরিং করা হয়। এর ফলে প্রকল্পের তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত থাকছে। পাশাপাশি যেকোন সময় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত হতে পারছেন। এর মাধ্যমে আরো দক্ষভাবে প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হচ্ছে।

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর তথা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পত্তি থেকে বিমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়ে থাকে। প্রতিবেদনাধীন সময়ে এ দপ্তরে কর্মরত এষ্টেট ও আইন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী, সওজ, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১,২৯৪.৪৭ একর সওজ এর সরকারি ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। উদ্ধার করা ভূমি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দখলে রাখার লক্ষ্যে দৃষ্টিনন্দন বাগান তৈরিসহ স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করা হয়ে থাকে।

সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কে একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার যে লক্ষ্য সরকার নির্ধারণ করেছে তা অর্জন করতে হলে দেশের সড়ক নেটওয়ার্ক কে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নিম্নোক্ত মাইলফলক গুলো অর্জন করতে পারবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের লক্ষ্য-

  • ঢাকার সাথে সকল বিভাগীয় শহর এবং সমুদ্র বন্দর ও বড় স্থল বন্দর গুলো এক্সপ্রেস ওয়ে-র মাধ্যমে সংযুক্ত করণ।
  • সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং যানজট সম্পূর্ণভাবে নিরসনের জন্য হাইওয়ে নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনগুলোতে গ্রেড সেপারেটেড ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ।
  • দেশের প্রতিটি উপজেলার সাথে ঢাকার  শতভাগ নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ
  • সড়ক দূর্ঘটনার সংখ্যা শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা
  • আন্তঃদেশীয়, আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগের সাথে জড়িত সকল মহাসড়ক কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ।
  • প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতিতে সড়ক নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে শত ভাগ উত্তম থেকে অতি উত্তম মানের সড়ক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
  • সড়ক নির্মান,রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনায় প্রাইভেট সেক্টরের অধিকতর অংশগ্রহণ।

সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে প্রতিনিয়ত অনেক চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়। মহাসড়ক অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন, কাজের গুনগত মান বজায় রাখা, সম্পাদিত সড়ক অবকাঠামোর প্রত্যাশিত স্থায়িত্ব অর্জন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন আর্থ সামাজিক প্রতিকূল অবস্থার কারণে মহাসড়কে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্বাভাবিক এবং দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিপাত এবং তাপমাত্রায় ধরণ পরিবর্তনের ফলে ফলে মহাসড়কসমূহ অতি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে আওতাধীন বিভিন্ন মেগা প্রকল্প, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট অন্যান্য প্রকল্প এবং বিভিন্ন সড়ক জোন কর্তৃক গৃহীত মাঝারি ও ছোট প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনবার্সন, প্রকল্প এলাকার মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন বৈধ ও অবৈধ সামাজিক ও ধর্মীয় অবকাঠামো অপসারণ, ইউটিলিটি স্থানান্তর, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হতে ধাপে ধাপে সম্মতি গ্রহণ, প্রকল্প পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলীর কারিগরি, আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, বাস্তব প্রয়োজনে ডিজাইন পরিবর্তনজনিত ভেরিয়েশন ও ডিপিপি সংশোধনে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। মহাসড়ক সংলগ্ন সওজ ভূমিতে স্থানীয় প্রশাসন ছাড়াও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যাক্তি ও গোষ্ঠী কর্তৃক যত্রতত্র হাট বাজার ইজারা প্রদান, মহাসড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে নিজস্ব কোন জনবল বা কর্তৃত্ব না থাকা এবং মহাসড়কে অন্য সংস্থা কর্তৃক নির্মিত পার্শ্ব সড়ক সংযোগের কোন আইন বা বিধি না থাকা সড়ক পথে নিরাপদে ও নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্য পৌছানোর ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা।

সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কার্যক্রম অনেকগুন বৃদ্ধি পেলেও তুলনামূলক ভাবে জনবলের কোন বৃদ্ধি ঘটেনি। ফলে অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরে প্রকৌশলী সহ অন্যান্য সহায়ক জনবলের ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। বৃহৎ প্রকল্প প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়নের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সম্প্রসারণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

বৈশ্বিক কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ হতে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষনা হওয়ার দরুন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এর কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত ছিলো। বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রমও এই সময়কালে বিঘ্নিত হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে নতুন করে সমস্ত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

উপসংহার

বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলাকেই সরকার বর্তমানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং সরকারের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যহত রাখার জন্য অবকাঠামো সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ কান্ডারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সর্বতোভাবে নিয়োজিত আছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেকসই, নিরাপদ ও মানসম্মত মহাসড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কোন বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে গত ১০ বছরে উন্নয়ন কাজের যে গতিশীলতা অর্জিত হয়েছে তা অব্যাহত রাখার পূর্বশর্ত হল উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। তাই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারিগর হিসেবে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য  সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকেই অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের একক প্রচেষ্টায় কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব নয়। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকান্ড এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাথে সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিবিড় সংশ্লেষ রয়েছে। অধিদপ্তরে কর্মরত কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের মেধা, পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতার উপর সড়ক সেক্টরের সফলতা যেমন নির্ভর করছে তেমনি আগামীর পথে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই অধিদপ্তরকে প্রদান করা সহযোগিতার উপর। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ,রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার পথে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সামনে যে প্রতিবন্ধকতা গুলো আছে তা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া এক্ষেত্রে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, গবেষক এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমূহেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সমৃদ্ধির আরো উচ্চতর সোপানে পৌঁছার জন্য চলমান ও পরিকল্পনাধীন কর্মসূচীসমূহ অন্যান্য সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নিবিড় সহযোগিতায় নির্ধারিত সময়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে গুণগত মান বজায় রেখে বাস্তবায়নে এ অধিদপ্তর কাজ করে যাবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

 

সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতি- এর পক্ষে

আশীষ মুখার্জী
নির্বাহী প্রকৌশলী
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর

এ, জেড, এম, ফারহান দাউদ
নির্বাহী প্রকৌশলী
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর

REACH US Get Direction to the Event

Sarak Bhaban

Tejgaon, Dhaka-1208, Bangladesh.

Programme Details

Date: Saturday, 28th November 2020

Platform: Online (Zoom)